
আল কুরআনে মানবজাতির সাথে সম্পর্কিত সকল বিষয় নিয়েই আলোচনা করা হয়েছে। যেহেতু হিন্দু ধর্মের অনুসারীরাও এই মানবজাতির অংশ, তাই হিন্দু ধর্মের দেব-দেবীদের সম্পর্কে আল-কুরআনে অবশ্যই কিছু বলা থাকবে। আল কুরআনে সাবেঈন নামক এক জাতির কথা আলোচনা করা হয়েছে। অনেক আলিমের মতে এই সাবেঈন বলতে বোঝানো হয়েছে প্রাচীন ভারতীয় আর্যসমাজকে।
মানবজাতির এই পৃথিবীতে বসবাস করার অনেক আগে থেকেই জ্বীনজাতি এই পৃথিবীতে বসবাস করত। বুখারী- মুসলিম শরীফের অনেক হাদীসেই হযরত আদম আলাইহিস সাল্লামের পৃথিবীতে আগমনের পূর্বে জ্বীন জাতির অনেক ঘটনা পাওয়া যায়। তাই স্বাভাবিকভাবেই অনুমান করা যায় যে, তখন হয়ত জ্বীনদের মাঝেও নবী-রাসূল এসে থাকবেন। কারণ মানুষ ও জ্বীন উভয়েরই আখিরাতে হিসাব নিকাশ হবে। হ্যাঁ, আল কুরআনেও বলা আছে যে, জ্বীনদের মাঝেও নবী-রাসূলগণ এসেছিলেন।
আল-কুরআনের সূরা আনআমের ১৩০ নং আয়াতে মহান আল্লাহ্ সুবহানাহু ওয়াতায়ালা বলেছেন-
يَا مَعْشَرَ الْجِنِّ وَالْإِنْسِ أَلَمْ يَأْتِكُمْ رُسُلٌ مِنْكُمْ يَقُصُّوْنَ عَلَيْكُمْ آيَاتِىْ وَيُنْذِرُوْنَكُمْ لِقَاءَ يَوْمِكُمْ هٰذَا قَالُوْا شَهِدْنَا عَلىٰ أَنْفُسِنَا وَغَرَّتْهُمُ الْحَيٰوةُالدُّنْيَا وَشَهِدُوْا عَلىٰ أَنْفُسِهِمْ أَنَّهُمْ كَانُوْا كَافِرِيْنَ.
অর্থ: “হে জ্বিন ও মানব জাতি! তোমাদের কাছে কি তোমাদের নিজেদের মধ্য হতে এমন রাসূল আসেনি, যারা তোমাদেরকে আমার আয়াত পড়ে শোনাত এবং তোমাদেরকে এ দিনের সম্মুখীন হওয়ার ব্যাপারে সতর্ক করত, যে দিনে আজ তোমরা উপনীত হয়েছ?
তারা বলবে, (আজ) আমরা নিজেরাই নেজেদের বিরুদ্ধে সাক্ষ্য দিলাম (যে, সত্যিই আমাদের কাছে নবী-রাসূল এসেছিলেন, কিন্তু আমরা তাদেরকে প্রত্যাখ্যান করেছিলাম)। (প্রকৃতপক্ষে) পার্থিব জীবন তাদেরকে ধোঁকায় ফেলে দিয়েছিল। আর আজ তারা নিজেদের বিরুদ্ধে সাক্ষ্য দিল যে, তারা কাফের ছিল।” (সূরা আনআম, আয়াত : ১৩০)
এই আয়াতের ব্যাখ্যায় তাফসীরে মা’আরিফুল কুরআনে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে। এই আয়াত দ্বারা স্পষ্ট বুঝা যায় জ্বীন জাতির মাঝেও তাদের নিজেদের সম্প্রদায় থেকে নবী রাসূলদের আবির্ভাব হয়েছিল। এর পরের আয়াতে আল্লাহ্ সুবহানাহু ওয়াতায়ালা বলেন-
ذٰلِكَ أَنْ لَمْ يَكُنْ رَّبُّكَ مُهْلِكَ الْقُرىٰ بِظُلْمٍ وَّأَهْلُهَا غٰفِلُوْنَ.
অর্থ: “এটা (নবী প্রেরণের ধারা) ছিল এজন্য যে, কোন জনপদকে সীমালংঘনের কারণে এ অবস্থায় ধ্বংস করা তোমার প্রতিপালকের পছন্দ ছিল না যে, তার অধিবাসীগণ অনবহিত থাকবে।” (সূরা আনআম, আয়াত ১৩১)
আপনারা নিশ্চয় লক্ষ্য করে থাকবেন হিন্দুদের দেবদেবী দূর্গা, কালি, লক্ষী, শিব, গণেশ, মহাদেব—তাঁদের অনেকের মুখে হাতির মত শুঁড়, কোনটির অনেকগুলো হাত-পা আবার কোনটির একাধিক মুখ রয়েছে। কোন মানুষের আকৃতি কখনো এরকম হতে পারে না। তবে জ্বীনদের এরকম আকৃতি হওয়াটাই স্বাভাবিক। কারণ জ্বীনদের আকৃতি সম্পর্কে সাহাবী হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে মাসঊদ রাযিয়াল্লাহু আনহুর সূত্রে যে বর্ণনা পাওয়া যায়, সেখানে তিনি রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বলেছিলেন যে, বিভিন্ন বিচিত্র আকৃতির প্রাণীকে আপনার কাছে আসতে দেখেছি।
‘মুসনাদে আহমদ’ নামক হাদীস গ্রন্থে ও বুখারী-মুসলিমে লাইলাতুল জ্বীনের যে ঘটনাগুলো পাওয়া যায়, সেখানে আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ রাযিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত আছে যে-
একবার আহলে সুফফার লোকদের মধ্যে সকলকেই কেউ একজন খাওয়ানোর জন্য নিয়ে গেছেন, শুধু আমি একা রয়ে গিয়েছি, আমাকে কেউ নিয়ে যায়নি। আমি একা মসজিদে নববীতে বসে ছিলাম। এমন সময় রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মসজিদে এলেন। তাঁর হাতে ছিল খেজুরের ছড়ি। তা দিয়ে তিনি আমার বুকে মৃদু আঘাত করলেন এবং বললেন, “আমার সাথে চল”।
এরপর আমরা রওনা হলাম। যেতে যেতে আমরা মদীনার ‘বাকীয়ে গারকাদ’ পর্যন্ত পৌঁছে গেলাম। ওখানে রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নিজের ছড়ি দিয়ে একটি গোল রেখা টানলেন এবং আমাকে বললেন, “এর মধ্যে বসে যাও, আমি না আসা পর্যন্ত এখানেই থাকবে”।
এরপর তিনি চলতে শুরু করলেন। আমি রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে খেজুর গাছের বাগানের ভেতর দিয়ে হেঁটে যেতে দেখলাম। শেষ পর্যন্ত একটি কালো কুয়াশা ছেয়ে এসে তাঁর ও আমার মাঝে আঁড় তৈরি করে দিয়েছে। আমি নিজের জায়গায় বসে শুনতে পাচ্ছিলাম, রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর ছড়ি ঠুকছিলেন এবং বলছিলেন, “বসে যাও, বসে যাও।”
অবশেষে রাত পেরিয়ে সকাল হতে শুরু করল। (কৃত্রিম) কুয়াশা কেটে গেল। রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমার কাছে এলেন। রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাকে বললেন, “তুমি যদি এই বৃত্ত থেকে বের হতে তাহলে জ্বীনরা তোমাকে উঠিয়ে নিয়ে যেত”।
আমাকে রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম জিজ্ঞেস করলেন, “তুমি রাতে কি দেখেছিলে?”
আমি বললাম, বিভিন্ন বিচিত্র আকৃতির প্রাণীকে আপনার কাছে আসতে দেখেছি।
রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, “ওরা ছিল নাসীবাইনের জ্বিনদের প্রতিনিধি দল। ওরা আমার কাছে কুরআন শিখতে এসেছিল।”
এ হাদিসে হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ রাযিয়াল্লাহু আনহু জ্বীনদের আকার-আকৃতিগুলোকে বিচিত্র আকৃতির বলেছেন। আচ্ছা আপনারা এখন লক্ষ্য করুন! দূর্গা, কালি, লক্ষী, শিব, গণেশ, মহাদেব, কার্তিক, কৃষ্ণ, বিষ্ণু—তাঁদের আকার-আকৃতিগুলোও কিন্তু বিচিত্র আকৃতির, যেমন অনেকের মুখে হাতির মত শুঁড়, আবার কারো অনেকগুলো হাত-পা, আবার কারো একাধিক মুখ রয়েছে। আরবের কাফেররা যে লাত-উজ্জার পূজা করত হাদীস শরীফেও কিন্তু বলা আছে যে, তারা দুষ্ট জ্বীন ছিল। আবার অনেক জ্বীন পরবর্তীতে রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের ওপর ঈমান আনলেও তাদের মানুষ অনুসারীরা আর রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের ওপর ঈমান আনেনি। এ জাতীয় বর্ণনাও বিভিন্ন কিতাবে পাওয়া যায়। তাই কোন কোন আলেমের মতে হিন্দুরা যাদের পূজা করে তারা সবাই হলো কাফির জ্বীন।
মক্কা বিজয়ের পর রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ৮ম হিজরীর রমযান মাসের ২৫ তারিখে হযরত খালিদ বিন ওয়ালীদ রাযিয়াল্লাহু আনহুর নেতৃত্বে ‘ওযযা’ মূর্তি ভূমিসাৎ করতে একটি সারিয়্যা (ছোট সৈন্যদল) প্রেরণ করেন। ওযযা নামক মূর্তিটি নাখালায় স্থাপিত ছিল। কুরাইশ এবং সমগ্র বনু কেনানা গোত্র এ মূর্তির পূজা করত। এটি ছিল তাদের সবচেয়ে বড় মূর্তি। বনু শায়বান গোত্রও এ মূর্তির পূজা করত। এটি ছিল তাদেরও সবচেয়ে বড় মূর্তি। হযরত খালিদ বিন ওয়ালীদ রাযিয়াল্লাহু আনহু সহ ৩০ জন সৈন্য নাখালায় গিয়ে এ মূর্তিটি ভেঙে ফেলেন। ওযযা মূর্তিটি ভাঙার পর ফিরে আসার পর রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হযরত খালেদ রাযিয়াল্লাহু আনহু কে জিজ্ঞাসা করলেন, “তুমি কি কিছু দেখেছ?”
তিনি বললেন, “কই না তো।” তারপর রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, “তবে তো তুমি মূর্তিই ভাঙতে পারোনি?” তারপর হযরত খালিদ বিন ওয়ালীদ রাযিয়াল্লাহু আনহু পুনরায়ে উন্মুক্ত তলোয়ার উঁচিয়ে নাখালায় গেলেন। এবার তিনি দেখলেন, এক কালো নগ্ন দেহের ন্যাড়া মাথার মহিলা তার দিকে এগিয়ে আসছে। হযরত খালিদ বিন ওয়ালীদ রাযিয়াল্লাহু আনহু তরবারি দিয়ে তাকে এক আঘাত করেন। এতে সে মহিলা দু‘ টুকরো হয়ে যায়। এরপর হযরত খালিদ বিন ওয়ালীদ রাযিয়াল্লাহু আনহু এসে রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে এই খবর দেন। তখন রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, “হ্যাঁ, সেই ছিল ওযযা। এবার সে তোমাদের দেশে তার পূজার ব্যাপারে নিরাশ হয়ে গেছে।” (আর রাহীকুল মাখতুম, ৪৪৪ পৃষ্ঠা) এই হাদীস দ্বারা বোঝা যায় যে, প্রতিটি মূর্তির পিছনেই একটি করে কাফির মহিলা জ্বীন থাকে।
সে মাসেই রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হযরত সা‘দ ইবনে যায়েদকে ‘মানাত’ মূর্তিটি ধ্বংস করতে মোশাল্লা নামক এলাকায় পাঠান। আওস, খাযরায ও গাসসান গোত্রের লোকেরা এই মানাত মূর্তির পূজা করত। হযরত সা‘দ সেখানে পৌঁছার পর পুরোহিত জিজ্ঞেস করল, তুমি কি চাও? তিনি বললেন, “মানাতকে ধ্বংস করতে চাই।” পুরোহিত তখন বলল, তুমি কখনোই মানাতকে ধ্বংস করতে পারবে না। এরপর হযরত সা‘দ লক্ষ্য করলেন বীভৎস চেহারার কালো ন্যাড়া মাথার এক মহিলা মানাত মূর্তি থেকে বেরিয়ে আসছে। এরপর হযরত সা‘দ তাঁর তলোয়ার দিয়ে সেই বীভৎস চেহারার কালো ন্যাড়া মাথার মহিলাকে হত্যা করেন। এরপর হযরত সা‘দ মানাত মূর্তিটি ধ্বংস করেন। (আর-রাহীকুল মাখতুম, ৪৪৫ পৃষ্ঠা)
এই হাদীস থেকেও এটা বোঝা যায় যে, প্রতিটি মূর্তির পিছনেই একটি করে কাফির মহিলা জ্বীন বসবাস করে। আমার নিজের জীবনেও অনেক জ্বীন সংশ্লীষ্ট ঘটনা রয়েছে। ব্যক্তিগত জীবনে আমি নিজেও অনেক মন্দিরে যাতায়াত করেছি, অনেক পূজামণ্ডপে পূজা দেখতে গিয়েছি। হিন্দুদের মন্দিরগুলোতে যে দুষ্ট জ্বীনেরা বসবাস করে থাকে তা আমি বেশ ভালোভাবেই বুঝতে পেরেছি।

তাফসীরে জালালাইনের সম্মানিত লেখক আল্লামা জালালুদ্দীন সুয়ূতী রহ্.–র জ্বীন জাতিকে নিয়ে লেখা তাঁর একটি বিখ্যাত বই হল-“লুক্বাতুল মারজান ফী আহকামিল জান্।” এই বইটিকে বলা হয় জ্বীন জাতিকে নিয়ে লেখা বিশ্বকোষ। এই বইটির বাংলা অনুবাদ “জ্বীন জাতির বিস্ময়কর ইতিহাস” এই নামে অনুদিত হয়ে ঢাকার মদীনা পাবলিকেশন্স, ৩৮/২ বাংলাবাজার, ঢাকা থেকে প্রকাশিত হয়েছে।
এই বইটি পড়লে আপনারা জানতে পারবেন যে, জ্বীনদের সমাজ কাঠামো হল অনেকটা মাতৃতান্ত্রিক। তাই আরবের লাত, উজ্জারাও যেমন মহিলা জ্বীন ছিল, ঠিক তেমনি ভারতের দূর্গা, কালী, লক্ষী—তাঁরাও কিন্তু মহিলা জ্বীন। মজার ব্যাপার হল জাহেলী যুগে আরবের কাফেররা যেসব জ্বীনের পূজা করত তারা কিন্তু ঠিকই রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের ওপর ঈমান এনেছিল বটে, কিন্তু ঐ জ্বীন পূজারী কাফেররা আর মুসলমান হয়নি।
এই ঘটনাটি নিয়ে পরবর্তীতে আল-কুরআনে ওহী নাযিল হয়েছিল। আবূ বকর ইবনু আবূ শায়বা (রহ.) আব্দুল্লাহ্ (রাযিয়াল্লাহু আনহু) থেকে বর্ণিত, আল্লাহ্ সুবহানাহু ওয়া তায়ালার ইরশাদ করেছেনঃ “তারা যাদেরকে আহবান করে তারাই তো তাদের প্রতিপালকের নৈকট্য লাভের উপায় সন্ধান করে।” এই আয়াতের ব্যাখ্যায় বলেন, একদা একদল জ্বিন মুসলমান হলো। তাদের পূজা করা হতো। কিন্তু ইবাদতকারী এ লোকগুলো তাদের ইবাদতই আঁকড়ে থাকলো। অথচ জ্বিনেরা ইসলাম গ্রহণ করেছেন। (ইসলামিক ফাউন্ডেশন। সহীহ মুসলিম অধ্যায়ঃ ৫৬/ তাফসীর। হাদীস নাম্বার: 7273)
এছাড়াও সূরা বনী ইসরাঈলের ৫৭ নম্বর আয়াত নাযিল হওয়ার ব্যাপারে আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেন, “কিছু লোক অপর কিছু জিনের ইবাদত করত, পরে সে জিনগুলো ইসলাম গ্ৰহণ করে। কিন্তু সেই মানুষগুলো সেই সমস্ত জিনের ইবাদত করতেই থাকল। তারা বুঝতেই পারল না যে, তারা যাদের ইবাদত করছে তারা ইসলাম গ্ৰহণ করে ফেলেছে। এমতাবস্থায় এ আয়াত নাযিল হয়।” [বুখারীঃ ৪৭১৪, ৪৭১৫, মুসলিমঃ ৩০৩০]
জ্বীনদের আয়ুষ্কাল সাধারণতঃ ১০০০ থেকে ২০০০ বছর হয়। সে হিসেবে দূর্গা, কালী, লক্ষী—এই কাফির জ্বীনগুলো বহু আগেই মারা গেছে। হিন্দুরা এখন যেই কাফির জ্বীনগুলোর পূজা করছে এগুলো হচ্ছে সব মৃত জ্বীন। আর এটা তো সত্য কথা, যেই রাবনের ১০টা মাথা আছে সে আর যাই হোক কোনো মানুষ হতে পারে না। হিন্দুরাই বলে, রাবন হচ্ছে রাক্ষস-খোক্ষস, আর আমরা মুসলমানরা বলি, রাক্ষস-খোক্ষস, ভূত-প্রেত্নী বলতে এই পৃথিবীতে কিছু নেই। যদি থাকে তাহলে শুধু জ্বীনেরাই আছে এই পৃথিবীতে।
হিন্দুদের দেব-দেবীরা একেক সময় এক এক রূপ ধারণ করে। এতে বোঝা যাচ্ছে উনাদের মাঝে মনুষ্যশ্রেণীর বৈশিষ্ট্যগুলো নেই। উনারা জ্বীন বলেই একেক সময় এক এক রূপ ধারণ করতে পারেন।
যারা ‘মৎস্য পুরাণ’ পড়েছেন তারা জানেন যে ব্রহ্মা তার আপন মেয়ে সরস্বতীকে বিয়ে করেছিল, হিন্দুদের ভাইফোঁটা উৎসবের প্রবর্তক যম ও যমী আপন ভাই-বোন হওয়া সত্ত্বেও বিবাহ করতে চেয়েছিলো। তাই হিন্দুরা যেসব জ্বীনদের পূজা করে, তারা যে অযাচারপ্রিয় এতে কোনো সন্দেহ নেই। হিন্দুদের দেবদেবীদের মাঝে Incest/অযাচারের অনেক উদাহরণ আছে।
আমাদের উচিত হিন্দুদেরকে তাওহীদের দাওয়াত দেওয়া, যেন হিন্দুরা বেশ্যা, শয়তান, অযাচারপ্রিয় মৃত জ্বীনদের উপাসনা বাদ দিয়ে দ্বীন ইসলামের সুশীতল ছায়াতলে আসতে পারে।
নটরডেম কলেজে পড়ার সময় আরামবাগের মেসে প্রায় ২ বছর ছিলাম। ভন্ড দেওয়ানবাগীর আস্তানার পাশেই ভাড়া থাকতাম। তো একদিন এশার নামায পরে রুমে এসে দেখি আমার সামনে বারান্দায় ব্যাঙের মত লাফিয়ে লাফিয়ে একটা ছেলে পুরা বারান্দা অতিক্রম করে হাওয়া হয়ে গেল। আমি দৌড়িয়ে বারান্দায় গিয়ে ঐ ছেলেটা ধরতে চাইলাম। কিন্তু সে বাতাসের মাঝে অদৃশ্য হয়ে গেল। তখন অল্প বয়স ছিল, ইবাদতে এখলাস ছিল। তাই আল্লাহ সুবহানাহু তায়ালা অনেক কিছুই দেখাইছেন।
munnarashadul@gmail.com
তাহলে যে সকল ঈমানদার মুসলিম এই খারাপ জিনদের সম্পর্কের জেনে বুঝে তাদের পূজাকে সাপোর্ট করতেছে তাদের সম্পর্কে কিছু বলবেন আশা করি