
আমি দীর্ঘ সাড়ে দশ বছর পর কারাগার থেকে মুক্তি পাই। কারাগারে থাকলেও বাইরের সব খবর টুকটাক পেতাম। নতুন যেইসব আসামী জেলে আসত, তাদের মাধ্যমে যেমন নতুন নতুন খবর পাওয়া যেত, আবার কারারক্ষীদের মাধ্যমেও অন্তর্জালের অনেক খবর পাওয়া যেত। সিলেট জেলে আমি এমন একজন কারারক্ষী পাই, যিনি কিনা কলেজ লাইফে বামপন্থী রাজনীতির সাথে যুক্ত ছিল এবং যথারীতি সে নাস্তিক ছিল। সে রমজান মাসে রোযাও রাখত না, নামায কালামের ধার ধারতো না। তো যাই হোক তার মাধ্যমে আমি অন্তর্জালের বেশ কিছু প্রথম শ্রেণীর অজ্ঞেয়বাদীদের বর্তমান অবস্থা সম্পর্কে হাল নাগাদ তথ্য পাই। এখানে উল্লেখ্য CID এর inspector আরমান আলী আমাকে সিলেটের ব্লগার অনন্ত বিজয় হত্যা মামলায় জড়িত করার কারনে আমাকে বেশ কিছুদিন সিলেট কারাগারে থাকতে হয়েছে। সিলেটের ঐ বামপন্থী বে -রোজদার কারারক্ষী আমাকে বলে আমার সাথে যারা একই প্লাটফর্মে ধর্মের বিরুদ্ধে লেখালেখি করেছে, তারা আজকে সবাই পশ্চিমা বিশ্বে সেটেল হয়ে গেছে। বেশ ভালোই জীবন যাপন করছে তারা। সেই বামপন্থী কারারক্ষী আমাকে এই কথাও বলে – “যেই আল্লাহ আপনাকে ইউরোপে নিতে পারল না সেই আল্লাহ আপনাকে জান্নাতে নিবে কিভাবে ? ” নাউযুবিল্লাহ। আমার তখন ঐ নাস্তিক কারারক্ষীর সাথে ধর্ম নিয়ে তর্ক বিতর্ক করার মন মানসিকতা ছিল না। আর কারাগার খুবই স্পর্শকাতর একটি জায়গা। সেইখানে একজন কারারক্ষীর সাথে বাদানুবাদ করার পরিনতি ভালো হয় না।
তো যাই হোক তখন আমি একটা ব্যাপার নিয়ে চিন্তা করে দেখলাম যে আমাদের নবী রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহ আলাইহি ওয়া সাল্লাম দুনিয়া থেকে বিদায় নিয়েছেন আজ থেকে প্রায় ১৪০০ বছর আগে। কিন্তু এতদিন পরও আমাদের নবীজী এখনও কত প্রাসঙ্গিক! আল্লাহর রাসুলকে নিয়ে ওয়াজ করে, লেখালেখি করে, মিলাদ পরিয়ে কতো লোকই তো জীবিকা নির্বাহ করছে আবার আমাদের নবীজীকে নিয়ে কুৎসা রটিয়ে, অশ্লীল লেখালেখি করে, তথ্য বিকৃতি করে কত নাস্তিকই তো পেট চালাচ্ছে, সাদা চামড়ার দেশে মোটামুটি ভালোভাবে জীবিকা নির্বাহ করছে। তো তাদের এই লেখা গুলি যদি হিন্দুদের দেবদেবী, গৌতম বুদ্ধদের নিয়ে হত তাহলে পশ্চিমা বিশ্ব তাদের দিকে ফিরেও তাকাত না। কারন পশ্চিমা বিশ্বের বিদগ্ধ সমাজ হিন্দুদের দেবদেবী, গৌতম বুদ্ধ, বোধিসত্ব এইসব সমালোচনা মূলক লেখালেখির প্রতি কোন আগ্রহ বোধ করে না ।
পৌরাণিক চরিত্রের আবার সমালোচনা কি? পৌরাণিক চরিত্র তো পৌরানিক চরিত্রই। তো এটা কিন্তু আমাদের নবীজীর ১টি মুজেজা উনার ইন্তেকালের ১৪০০ বছর পরেও ওনার চিন্তা, স্মৃতি উনার শিক্ষা কত লোকের জীবিকার উৎস, কেউ নেকি অর্জন করে জীবিকা নির্বাহ করে আবার কেউ গুনাহ কামিয়ে জীবিকা নির্বাহ করে। আমাদের মানব জীবনে নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের প্রভাব কত গভীর এবং চিরন্তন ! ১৪০০ বছর পরও উনার আলোচনা আজকের সমাজে কত প্রাসঙ্গিক, মানুষ উনার পক্ষে লেখালিখি করে, আবার উনার বিপক্ষে লেখালিখি করে জীবিকা নির্বাহ করছে। এটা আমাদের শেখায় যে নবীজীর অবদান শুধুই ধর্মীয় নয়, মানবতার জন্যও অসাধারণ। আমাদের উচিত তাঁর প্রতি কৃতজ্ঞ থাকা এবং তাঁর শিক্ষা থেকে অনুপ্রেরণা নেওয়া। সত্যিই নবিজীর মহিমা এমন যে, উনার ইন্তেকালের ১৪০০ বছর পরও উনাকে কেন্দ্র করেই মানুষ জীবিকা নির্বাহ করছে—কেউ সমর্থন দিয়ে, আবার কেউ বিরোধিতা করে। এটাই প্রমাণ করে নবীজীর শিক্ষা আজও সবচেয়ে প্রাসঙ্গিক।
বিজ্ঞান মনস্ক নাস্তিকরা চাইলেই google Microsoft এর মত বড় বড় কোম্পানির চাকরি নিতে পারে। কিন্তু তারা এগুলি না করে সারাদিন খালি মুসলমানদের পিছে লেগে থাকে। এতে বুঝা যায় মুসলমানদের পিছে লেগে থাকার জন্যই তাদেরকে অর্থ দেওয়া হয়। এত বছর পরও আজকে নবীজির পক্ষে লেখালেখি করে যেমন অনেকে পেট চালাচ্ছে, আবার উনার বিপক্ষে লেখালেখি করেও অনেক মুক্তমনা asylum পাচ্ছে, সাদা চামড়ার মেয়েদের সাথে Live together করতে পারছে। তো সেই হিসাবে মুক্তমনা সমাজের উচিত রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহ আলাইহি ওয়া সাল্লামের প্রতি কৃতজ্ঞ হওয়া, উনার অবদানকে স্বীকৃতি দেওয়া। কারন এই মহামানব যদি পৃথিবীতে না আসত, তাহলে আপনাদের পেটে ভাত যুগানোর মত কিছু থাকত না।
সৃষ্টির সেরা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের উপর অসংখ্য দুরুদ বর্ষিত হোক যিনি কুসংস্কার এবং প্রচলিত কুপ্রথাকে দূরীভূত করার জন্য প্রেরিত হয়েছেন এবং তাঁর সাহাবী ও বংশধরদের উপর আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তায়ালার রহমত বর্ষিত হোক; যাদের উত্তম প্রচেষ্টায় অন্ধকার যুগের কুসংস্কার সমূহ দূরীভুত হয়েছে। আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তায়ালার সন্তুষ্টি তাঁদের উপর বর্ষিত হোক।
بَلَغَ العُلى بِكَمَالِهِ
বালাগাল উলা বিকামালিহি
كَشَفَ الدُجى بِجَمَالِهِ
কাশাফাদ দুযা বিজামালিহি
حَسُنَتْ جَمِيعُ خِصَالِهِ
হাসুনাত জামিয়ু খিসালিহি
صَلُّوا عَلَيْهِ وَآلِهِ
সাল্লু আলাইহি ওয়া আলিহি